রেসিপি - বৃষ্টির দিনে বা রাতে খিচুড়ি - Jana Dorkari Bangla

Breaking

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪

রেসিপি - বৃষ্টির দিনে বা রাতে খিচুড়ি

রেসিপি - বৃষ্টির দিনে বা রাতে চটজলদি খিচুড়ি 

(How to cook instant khicuri recipe in Bengali)

বৃষ্টির জন্য সকালে বা রাতে একটু তাপমাত্রা কমতেই আমাদের মনে একটা কথা চাগাড় দিয়ে ওঠে "যদি গরম গরম খিচুড়ির সঙ্গে বেগুনি, পাঁপড় ভাজা খাওয়া যেত"। কথায় আছে ইচ্ছা থাকলে কোনো না কোনো উপায় বের করা যায়। তাই বৃষ্টির আমেজটাকে উপভোগ করতে আসুন শিখে নিই চটজলদি খিচুড়ি।

মুগ ডালের খিচুড়ি
খিচুড়ি আর গরম পাঁপড় ভাজা
Photo by Thomas Nahar: 


উপকরণঃ

এখানে চারজনের জন্য খিচুড়ি রান্নার উপকরণ নেওয়া হয়েছে। আপনারা প্রয়োজন অনুসারে বাড়িয়ে বা কমিয়ে নেবেন। 

রান্নার সামগ্রী মন্তব্য পরিমাপ
আতপ চাল গোবিন্দভোগ বা মোটা 500 গ্রাম
মুগ ডাল সোনামুগ বা ছোটো মুগ 250 গ্রাম
শুকনো লঙ্কা বোঁটা ছাড়িয়ে নেবেন 4 টি
তেজপাতা 2 টি
পাঁচফোড়ন 1 চামচ
হলুদ 1/2 চামচ + 1/2 চামচ 1 চামচ
সরষের তেল এক টেবিল চামচ
ঘি ঐচ্ছিক (optional) 1 চামচ
গরম মশলা গুঁড়ো ঐচ্ছিক (optional) 1/2 চামচ
লবণ আপনার স্বাদমতো দেবেন 2 চামচ
আলু খোসা ছাড়িয়ে 4 টি
চিনি আপনার স্বাদমতো দেবেন 1/2 চামচ
কাঁচা লংকা আপনার স্বাদমতো দেবেন 4 টি

চটজলদি খিচুড়ি রান্নার পদ্ধতিঃ-


(i) রান্নার সামগ্রী জোগাড়ঃ
প্রথমে একটি পাত্রে আতপ চাল নিয়ে দুই তিন বার ভালভাবে ধুয়ে নিয়ে অল্প জলের মধ্যে চাল ভিজিয়ে রাখুন। তারপরে সমস্ত রান্নার সামগ্রী হাতের কাছে এক জায়গায় গুছিয়ে রাখুন। একটা ছোটো বাটিতে দুইটি গোটা শুকনো লঙ্কা এবং দুইটি তেজপাতা রাখুন। আপর শুকনো লঙ্কা দুটি  লম্বালম্বি ভাবে অর্ধেকটা চিরে নিয়ে ওই বাটির মধ্যেই রাখুন। এক চামচ আদা বেটে নিন। আলুগুলির খোসা ছড়িয়ে রাখুন। কাঁচা লংকা লম্বালম্বি ভাবে চিরে রাখুন। 

(ii) ডাল শুকনো খোলায় ভাজাঃ
এবার আগুন জ্বালিয়ে নিয়ে, একটা কড়াই ওভেনের (উনুনের) ওপরে বসিয়ে দিন। এবার ওভেনে মাঝারি আঁচ রেখে মুগডাল কড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে দিন। একটা খুন্তি দিয়ে ধীরে ধীরে ডালগুলো নাড়তে থাকুন। মুগ ডালের ভাজার হালকা গন্ধ এবং ডালের রঙ বদলে লালচে হতে শুরু করলেই কড়াইটা সাবধানে ওভেনের ওপর থেকে নামিয়ে আনুন। এবার কড়াই থেকে ভাজা মুগ ডাল সাবধানে আরেকটি পাত্রে দিয়ে ডালের মধ্যে জল দিন। এবার ডালটা দুইবার ধুয়ে ফেলুন।

(iii) মুগডাল সেদ্ধঃ
পুনরায় আগুন জ্বালিয়ে, একটা বড় সসপ্যান ওভেনের (উনুনের) ওপর চাপিয়ে দিন। এবার সসপ্যানে দুই লিটার জল দিন। আঁচ বাড়িয়ে দিন। জল একটু গরম হতে শুরু করলেই জলে হাফ (1/2) চামচ হলুদ দিন। এবং আপনি যতটা লবণ খিচুড়ি রান্নায় দেবেন তার অর্ধেক পরিমান এখন সসপ্যানের জলে দিয়ে দিন। এবার জল ফুটতে শুরু করলেই ধীরে ধীরে  ধুয়ে রাখা ভাজা মুগডালটা দিয়ে দিন। সসপ্যানের মুখ ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে ফুটতে দিন। 

         দশ মিনিট পরে ওভেনের আঁচ কমিয়ে সসপ্যানের ঢাকনা খুলে নিন। এবার খুন্তি দিয়ে ডালটা নাড়তে থাকুন। এই সময় ওভেনের আঁচ মাঝারি রাখবেন। দশ মিনিট পরে একটি বড় হাতা অথবা খুন্তি দিয়ে হাঁড়ি থেকে একটু ডাল নিয়ে দেখুন যে সেদ্ধ হয়েছে কি না। মুগডালের একটি দানা নিয়ে আঙ্গুল দিয়ে টিপ দিলে ডালের দানা নরম হয়ে ভেঙ্গে যাবে।  যদি মুগডাল সেদ্ধ না হয়ে থাকে, তাহলে যতক্ষণ না সেদ্ধ হচ্ছে প্রতি পাঁচ মিনিট ধরে ডাল ফুটতে দেওয়ার পর পুনরায় পরীক্ষা করে দেখুন। ডাল সেদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর ওভেন (উনুন) থেকে সসপ্যানটি সাবধানে নামিয়ে নিন।

(iv) ডাল ফোঁড়নঃ
  এরপর একটি বড় হাঁড়ি নিয়ে ওভেনে চাপিয়ে দিন। ওভেনের আঁচ বাড়িয়ে দিন। এবার হাঁড়িতে এক বড় টেবিল চামচপরিমাপে সরষের তেল দিন। তেল গরম হতে দিন। একটি মৌরির দানা তেলে ছেড়ে দিন। যদি ভাজা হতে শুরু করে তাহলে সহজেই বুঝতে পারবেন যে তেল গরম হয়েছে। এবার হাড়ির গরম তেলে প্রথমে বাটিতে রাখা শুকনো লঙ্কা এবং তেজপাতা গুলো দিন। খুন্তি দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে নাড়িয়ে দেবেন। তারপর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এক চামচ পাঁচফোড়ন দেবেন। পাঁচফোড়ন ফুটতে শুরু করলে ওভেনের আঁচ মাঝারি রেখে, হাঁড়ির তেলের মধ্যে বাকি হাফ (1/2) চামচ হলুদ দিয়ে খুন্তি দিয়ে নাড়তে থাকুন । 

         শুকনো লঙ্কা এবং ফোড়নের রঙ কালচে হতে শুরু হলেই, সসপ্যান থেকে ফুটিয়ে রাখা ডাল সাবধানে হাঁড়ির মধ্যে ঢেলে দিন। এবার পুনরায় খুন্তি দিয়ে ডালটা নাড়িয়ে দিন, এতে ফোড়ন ডালের মধ্যে  ভালভাবে মিশে যাবে। 

(v) চাল ডালের মিশ্রণঃ
এবার ভিজিয়ে রাখা আতপ চাল থেকে জল বের করে দিন। ডালে ফোড়ন দেওয়ার পরে হাঁড়ির মধ্যে থাকা ডাল ফুটতে শুরু করলেই, হাঁড়িতে ধীরে ধীরে আতপ চাল এবং আলু ছেড়ে দিন। এরপর হাঁড়িতে আরো এক লিটার জল দিন। বাকি অর্ধেক পরিমাণ লবণ হাঁড়ির মধ্যে দিয়ে দিন। তারপর ওভেনের আঁচ বাড়িয়ে দিয়ে হাঁড়ির মুখে ঢাকনা বন্ধ করে পাঁচ মিনিটের জন্য ফুটতে দিন। 
        পাঁচ মিনিট পরে হাঁড়ির মুখ খুলে আদা বাটা এবং অর্ধেক চিরে রাখা কাঁচালংকা গুলো দিয়ে দেবেন। সঙ্গে হাফ (1/2) চামচ চিনি দেবেন। এবার ওভেনের আঁচ মাঝারি রেখে আরো পাঁচ মিনিট ফুটতে দিন। মাঝে মাঝে খুন্তি দিয়ে হাঁড়ির মধ্যে নাড়িয়ে দেবেন না হলে খিচুড়ি ধরে যেতে পারে। যতক্ষণ না খিচুড়ির চাল সেদ্ধ হচ্ছে প্রতি পাঁচ মিনিট ধরে খিচুড়ি ফুটতে দেওয়ার পর একটি হাতা দিয়ে খিচুড়ি তুলে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখুন।

(vi) ফাইনাল টাচ - আরেকটু স্বাদ এবং গন্ধঃ
খিচুড়ির ভাত এবং ডাল মিশে ঘন হতে শুরু করলেই ওভেনের আঁচ একদম কমিয়ে দিয়ে খিচুড়ির লবণ ঝাল পরীক্ষা করে নিন। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার খিচুড়িতে হাফ (1/2) চামচ গরম মশলা এবং এক চামচ ঘি দিয়ে খুন্তি দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে দিন।  দুই মিনিট পরে ওভেনের আঁচ একদম বন্ধ করে দিন। খিচুড়ির হাঁড়ি নামিয়ে নিন। 

বৃষ্টির দিনে বা রাতে পাঁপড়ের সাথে গরম গরম খিচুড়ি পরিবেশন করুন। 


বিশেষ মন্তব্যঃ চটজলদি খিচুড়ি রান্নায় লবণ, চিনি এবং লঙ্কা অবশ্যই আপনার স্বাদ অনুসারে দেবেন। যদি আপনি ঝাল খেতে অভ্যস্থ না থাকেন তাহলে এই রান্নায় কাঁচা লঙ্কা দেবেন না। খিচুড়ি বেশী নোনতা হয়ে গেলে স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।  খিচুড়ি রান্নার সময় লবনের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন। 

এই রেসিপিটি বাড়িতে একবার ট্রাই করে দেখুন। চটজলদি খিচুড়ি রেসিপি অনুসরণ করে রান্না করার পর সেই খিচুড়ির স্বাদ কেমন হয়েছিলো সেটা অবশ্যই নীচের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। 

কোন মন্তব্য নেই: