শীতের শুরুতে সুস্থ থাকার উপায়
শীত প্রায় এসে গেছে। শহরের কংক্রিটের জঙ্গলে সেটা পুরোপুরি বোঝা না গেলেও গ্রামঅঞ্চলের সকালের দিকে কিন্তু ঘন কুয়াশা সাথে বেশ জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ে। এদিকে শহর অঞ্চলে সকালের দিকে একটু ঠান্ডা ভাব থাকলেও দুপুর হতেই আবার চড়া গরম। এই তাপমাত্রা পরিবর্তন সহ্য করতে গিয়ে জ্বর, সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা আছে। কোভিড এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত অঞ্চলে সাধারণ জ্বর হলেও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় কি করলে মোটামুটি সুস্থ থাকা যাবে সে বিষয়ে আমরা নীচে আলোচনা করবো-
নিয়মিত স্নানঃ
শীতের শুরুতে নিয়মিত স্নান করা অবশ্যক। এতে অনেক ক্ষতিকারক ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে শরীর রক্ষা পায়। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে ঈষৎ উষ্ণ জলে স্নান করলে ভালো হয়। তবে চুল বেশীক্ষণ ভিজিয়ে রাখা যাবেনা, স্নান করার পর তাড়াতাড়ি শুকিয়ে নিতে হবে। স্নানের জলে দুই ফোঁটা নারকেল তেল মিশিয়ে নিলে ত্বক ভালো থাকবে। সপ্তাহে দুই দিন চুলে শ্যাম্পু ব্যাবহার করুন।
ফাইবার জাতীয় খাবারঃ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাদ্যতালিকায় নিয়মিত সবুজ শাক সবজি এবং একটি ফল রাখুন। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে যা আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এখন বাজারে ইতিমধ্যে শীতকালীন শাকসবজি আসতে শুরু করেছে। রান্নায় টাটকা সবজি ব্যাবহার করুন। ফলের মধ্যে আপেল, পেয়ারা, নাসপাতি, বাতাবি লেবু ইত্যাদি বেছে নিতে পারেন। এছাড়া শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর জন্য সয়াবিন, পনির, মাছ এবং মাংস গ্রহণ করুন।
রাতে হালকা খাবারঃ
শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় রাতের ডিনারে একটু অল্প পরিমাণে খাবার খান। রাতের বেলায় আমাদের শরীরে পরিপাক প্রক্রিয়া ধীরে হয়। সেক্ষেত্রে রাতে ভারী খাবার খেলে বদহজম এবং গ্যাস হয়ে ঘুমে ব্যাঘাত হবার সম্ভাবনা থাকে।
এসি কম ব্যাবহারঃ
শীতের শুরুতে এসির তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রীর ওপর সেট করুন। বিশেষ করে রাতের শেষের দিকে ঘুমানোর সময় এসির পরিবর্তে শুধু ফ্যান ব্যাবহার করুন।
গরম পোশাক পরিধানঃ
শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় ভোররাত এবং সকালে ঠান্ডা আবহাওয়া থাকলে অবশ্যই শীতের পোশাক পরুন। এই সময় গ্রামীণ এবং শীতপ্রধান এলাকায় ভ্রমণ করতে যাওয়ার সময় অবশ্যই শীতের পোশাক সঙ্গে নেবেন।
ত্বকের যত্নঃ
শীতের শুরুতে মরশুম বদলের সময় অবশ্যই ত্বকের যত্ন নিতে হবে। শীত পড়তেই ত্বক শুষ্ক হতে শুরু করে। ত্বক ঠিক রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যাবহার করুন। অ্যালোভেরা জেল ব্যাবহার করতে পারেন। ভেষজ স্ক্রিন প্যাক ব্যাবহার করতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে ঈষৎ উষ্ণ জলে পা ভিজিয়ে নেবেন।
জল পান করুনঃ
শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় জল পান করার চাহিদা কমে যেতে পারে। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরলের অভাবে আপনি ডি-হাইড্রেশনের শিকার হতে পারেন। তাই এই সময় ডি-হাইড্রেশন থেকে রক্ষা পেতে দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেতে হবে। সুস্থ ব্যাক্তিদের প্রতিদিন নুন্যতম তিন থেকে চার লিটার জল পান করা উচিৎ।
শরীরচর্চাঃ
প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ৩০ মিনিট আপনাকে হাঁটতে হবে। এছাড়া হালকা জগিং, ফ্রি হ্যান্ড শরীরচর্চা এবং যোগ ব্যায়ম আপনাকে সুস্থ রাখবে।
ডাক্তারের পরামর্শঃ
শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় জ্বর, সর্দি কাশি হওয়া স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে সাধারণ জ্বর হলে প্যারাসিটামল এবং সাধারণ সর্দি কাশিতে বিভিন্ন ভেষজ উপাদান যেমন আদার রস, বাসক, কালমেঘ এবং মধু - তুলসী পাতার রস সেবন করা যেতে পারে। তবে জ্বর এবং কাশি বেশী হলে, কোভিড অথবা ডেঙ্গু কবলিত এলাকায় জ্বর হলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন